সিরিয়ায় উত্তরাঞ্চলের যুদ্ধক্ষেত্র এবং আলাওয়াইত পর্বতমালার নিরাপত্তাচৌকিগুলো থেকে নিজেদের সেনা সরিয়ে নিচ্ছে রাশিয়া। তবে লাতাকিয়ায় হামেইমিম বিমানঘাঁটি এবং তারতুস নৌঘাঁটি থেকে এখনো সেনা সরানোর পরিকল্পনা নেই বলে জানিয়েছে রাশিয়া।
সিরিয়ার সামরিক ও নিরাপত্তা সূত্রগুলোর বরাত দিয়ে রয়টার্স জানায়, আসাদের পতনের পর রাশিয়া মূলত সম্মুখ যুদ্ধক্ষেত্র থেকে সেনা ও ভারী সরঞ্জাম প্রত্যাহার করছে। পাশাপাশি আসাদের সামরিক বাহিনীর উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের কিছু অংশও মস্কোতে ফিরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। তবে রাশিয়ার সামরিক উপস্থিতি এখনো কৌশলগতভাবে স্থায়ী ঘাঁটিগুলোতে বজায় রাখা হচ্ছে।
সাম্প্রতিক স্যাটেলাইট ফুটেজে দেখা গেছে, হামেইমিম ঘাঁটিতে দুটি আন্তোনভ এএন-১২৪এস পণ্যবাহী উড়োজাহাজ প্রস্তুত অবস্থায় রয়েছে। এটি বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ মালবাহী উড়োজাহাজ। সিরিয়ার এক নিরাপত্তা কর্মকর্তা জানান, শনিবার একটি পণ্যবাহী উড়োজাহাজ লিবিয়ার উদ্দেশ্যে ঘাঁটি ত্যাগ করেছে।
রুশ সেনাদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ একটি সিরীয় সামরিক সূত্র জানায়, রাশিয়া স্থলভাগের পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করে পুনরায় সেনা মোতায়েনের পরিকল্পনা করছে। এখন তারা যুদ্ধক্ষেত্র পর্যবেক্ষণের পাশাপাশি নিজেদের বাহিনীকে সংগঠিত করার কৌশল নিচ্ছে।
বিদ্রোহীদের অন্তর্বর্তী প্রশাসনের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা জানান, রাশিয়ার সামরিক ঘাঁটি এবং আসাদ সরকারের সঙ্গে করা পূর্ববর্তী চুক্তিগুলো ভবিষ্যৎ আলোচনার জন্য রেখে দেওয়া হয়েছে। বিদ্রোহী পক্ষের দাবি, চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত সিরিয়ার জনগণের মতামতের ভিত্তিতেই নেওয়া হবে।
তিনি আরও বলেন, আমাদের বাহিনী বর্তমানে লাতাকিয়ায় রাশিয়ার ঘাঁটির কাছাকাছি রয়েছে। তবে এ বিষয়ে বিস্তারিত এখনই বলা সম্ভব নয়।
রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মন্তব্য জানতে রয়টার্সের পক্ষ থেকে চেষ্টা করা হলেও কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।
রাশিয়ার একটি নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সূত্র জানিয়েছে, সিরিয়ার নতুন প্রশাসনের সঙ্গে রুশ সামরিক ঘাঁটির ভবিষ্যৎ নিয়ে আলোচনা চলছে। তবে রাশিয়া এখনই ঘাঁটি ছাড়ছে না।
আসাদের পতনের কয়েকদিন পরই রাশিয়া তাকে পালিয়ে যেতে সহায়তা করে এবং আশ্রয় দেয়। ২০১৫ সালে সিরিয়ার গৃহযুদ্ধের সময় আসাদকে সহায়তা করতে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন সামরিক পদক্ষেপ নেন। তবে বর্তমান পরিস্থিতিতে রাশিয়ার সামরিক উপস্থিতি এবং ঘাঁটির ভবিষ্যৎ নিয়ে অনেক প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।
আসাদের পতনের পর বিদ্রোহী নেতা আহমেদ আল-শারা (যিনি আবু মোহাম্মদ আল-জুলানি নামেও পরিচিত) রাশিয়ার ঘাঁটিগুলোর দীর্ঘমেয়াদি ভবিষ্যৎ নিয়ে কী অবস্থান নিয়েছেন, তা তাৎক্ষণিকভাবে নিশ্চিত করা যায়নি।