২০২১ সালে আফগানিস্তান থেকে যুক্তরাষ্ট্রের সেনা প্রত্যাহারের সময় ফেলে যাওয়া মার্কিন অস্ত্র এখন পাকিস্তানে হামলার ঘটনায় ব্যবহৃত হচ্ছে—এমনটাই উঠে এসেছে ওয়াশিংটন পোস্ট-এর এক অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এসব অস্ত্র তেহরিক-ই-তালিবান পাকিস্তান (টিটিপি) ও অন্যান্য জঙ্গিগোষ্ঠীর হাতে পৌঁছেছে।
মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) এক প্রতিবেদনে এ খবর দিয়েছে দ্য এক্সপ্রেস ট্রিবিউন।
প্রতিবেদনে জানানো হয়, এম১৬ রাইফেল, পিভিএস-১৪ নাইট-ভিশন যন্ত্র ও থার্মাল অপটিক্সসহ উন্নত প্রযুক্তির মার্কিন সামরিক সরঞ্জাম আফগান বাহিনীর জন্য বরাদ্দ থাকলেও, সেগুলো এখন পাকিস্তানে ব্যবহৃত হচ্ছে সীমান্তবর্তী হামলায়।
১১ মার্চ বালোচিস্তানের বোলানে জাফর এক্সপ্রেসে বোমা হামলার ঘটনায় ব্যবহৃত রাইফেলগুলো যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি ছিল বলে নিশ্চিত করেছে পাকিস্তানি কর্তৃপক্ষ। হামলার তদন্তে দুইটি রাইফেলের সিরিয়াল নম্বরের সূত্র ধরে জানা গেছে, এগুলো যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক মজুত থেকে ফেলে যাওয়া অস্ত্রের অংশ।
আফগানিস্তানে মার্কিন সহায়তা ও পুনর্গঠনের ওপর বিশেষ নিরীক্ষক সংস্থা (সিগার) জানিয়েছে, প্রায় আড়াই লাখ আগ্নেয়াস্ত্র ও ১৮ হাজার নাইট-ভিশন যন্ত্র আফগানিস্তানে রেখে গিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র। এই অস্ত্রভাণ্ডার যুক্তরাষ্ট্রের মেরিন বাহিনীর সমপর্যায়ের।
পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, ‘এই ধরনের উন্নত মার্কিন অস্ত্রের উপস্থিতি আমাদের নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতার জন্য গভীর উদ্বেগের বিষয়।’
অন্যদিকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গত ফেব্রুয়ারিতে মন্তব্য করেন, ‘আমরা বিলিয়ন বিলিয়ন ডলারের অস্ত্র ফেলে এসেছি, সবই উন্নত প্রযুক্তির।’ যদিও মার্কিন প্রতিরক্ষা বিভাগ (পেন্টাগন) বিষয়টিকে ছোট করে দেখানোর চেষ্টা করে, বলেছে, উদ্ধার হওয়া অস্ত্রগুলো পুরো অস্ত্রভাণ্ডারের ‘মাত্র একটি ক্ষুদ্র অংশ’।
যদিও কিছু ট্রেন হামলার দায় বেলুচিস্তানের একটি বিদ্রোহী গোষ্ঠী স্বীকার করেছে, ওয়াশিংটন পোস্ট এই ঘটনার সঙ্গে তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তানের সংশ্লিষ্টতার আশঙ্কা প্রকাশ করেছে। তবে এসব মার্কিন অস্ত্র বিভিন্ন গোষ্ঠীর হাতে কীভাবে পৌঁছাল, তা নিয়ে তদন্ত চলমান রয়েছে।