শরীয়তপুরের কীর্তিনাশার শাখা নদী থেকে এক ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। শরীরে একাধিক আঘাতের চিহ্ন থাকায় ডাকাতির ঘটনায় গণপিটুনিতে ওই ব্যক্তি মারা গেছেন বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে পুলিশ।
সোমবার (৩ মার্চ) বেলা ১২টার দিকে সদর উপজেলার চিতলিয়া ইউনিয়নের কাশিপুর এলাকার একটি শাখা নদী থেকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়।
স্থানীয় লোকজন, পুলিশ ও হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার রাতে একদল ডাকাত মাদারীপুরের রাজারচর এলাকায় বাল্কহেডে ডাকাতির চেষ্টা করে। পরে তাদের ধাওয়া দেন স্থানীয় বাসিন্দারা। এ সময় ডাকাতরা পালিয়ে শরীয়তপুরের তেতুলিয়া এলাকায় আসলে স্থানীয় বাসিন্দারা বাল্কহেড দিয়ে তাদের স্পিডবোটের গতিপথ রোধ করেন। এ সময় ডাকাতরা হাতবোমা ও এলোপাতাড়ি গুলি ছুড়লে আহত হন বেশ কয়েকজন। পরে ডাকাতরা স্পিডবোট ফেলে পালানোর সময় সাতজনকে আটক করে গণপিটুনি দিয়ে পুলিশের হাতে তুলে দেয় ক্ষুব্ধ জনতা। পরে ডাকাতদের গুরুতর আহত অবস্থায় সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তাদের মধ্যে দুইজনকে মৃত ঘোষণা করেন কর্তব্যরত চিকিৎসক। পরে আহত বাকি ৫ সদস্যকে গুরুতর আহত অবস্থান উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান চিকিৎসক। এদের মধ্যে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আরও এক ডাকাতের মৃত্যু হয়।
এ ছাড়া রোববার বিকেলে শরীয়তপুর জেলা লাগোয়া ও মাদারীপুর সদর উপজেলার খোয়াজপুর ইউনিয়নের বিদ্যাবাগিস এলাকার কীর্তিনাশা নদীতে আরও একটি অজ্ঞাতনামা মরদেহ উদ্ধার করা হয়। পরে পুলিশ নিহতের মরদেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মাদারীপুর সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।
থানা সূত্রে জানা যায়, শরীয়তপুরে ডাকাতির চেষ্টা ও অস্ত্র উদ্ধারের ঘটনায় পালং মডেল থানায় দুটি পৃথক মামলা দায়ের হয়েছে। শনিবার রাতে পালং থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আলমগীর হোসেন বাদী হয়ে মামলাগুলো করেন। এতে গণপিটুনিতে আহত পাঁচ ডাকাতসহ অজ্ঞাতনামা আরও ৮-১০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
আসামিদের মধ্যে রয়েছেন—মুন্সীগঞ্জের রিপন (৪০), শরীয়তপুরের আনোয়ার দেওয়ান (৫০), নড়িয়ার সাঈদ (২৫), মাদারীপুরের সজীব (৩০) ও শরীয়তপুরের রাকিব গাজী (৩০)। এদের মধ্যে চারজনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে।
বিষয়টি নিয়ে শরীয়তপুরের পুলিশ সুপার নজরুল ইসলাম বলেন, উদ্ধার হওয়া মরদেহটির শরীরে আঘাত ও জখমের চিহ্ন রয়েছে। আমরা ধারণা করছি গণপিটুনি শেষে ওই ব্যক্তি নদীকে ফেলে দেওয়া কিংবা পানিতে পড়ে গিয়েছিল। মরদেহটি উদ্ধার শেষে ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ বিষয়ে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।