রিমান্ডে এনে নন জুডিসিয়াল ফাঁকা স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নিয়ে এক নারী আইনজীবীর কাছে ৩০ লাখ টাকা চাঁদা দাবির ঘটনায় পুলিশের এক উপ-পরিদর্শকসহ (এসআই) ৫ জনের বিরুদ্ধে রাজবাড়ী আদালতে মামলা দায়ের করা হয়েছে। আদালত মামলাটি গ্রহণপূর্বক অনুসন্ধানের জন্য সিআইডিকে নির্দেশ দিয়েছেন।
মঙ্গলবার (৪ মার্চ) রাজবাড়ীর সদর আমলী আদালতে মামলাটি দায়ের করেছেন রাজবাড়ীর ভুক্তভোগী নারী আইনজীবী মুক্তা পারভীন।
মামলার আসামিরা হলেন- রাজশাহী মহানগরের চন্দ্রিমা থানার ছোট বনগ্রামের মৃত ইমাম শেখের ছেলে শেখ আব্দুল্লাহ, রাজশাহীর চরঘাট থানার চকবেলঘরিয়া গ্রামের লুৎফর রহমানের ছেলে ও রাজশাহী আরএমপি বোয়ালিয়া থানার প্রাক্তন উপ-পরিদর্শক (এসআই) ও ডিবি ডিএমপিতে কর্মরত মো. মাহফুজুর রহমান, লালমনিরহাট জেলার আদিতমারী থানার আদিতমারী গ্রামের মো. ওয়াহিদ উল আলমের ছেলে ও বর্তমান রাজশাহী শাহমখদুম থানার শাহমখদুম এলাকার বাসিন্দা মো. জাহিদ উল আলম, রাজশাহীর রাজপাড়া থানার চন্ডিপুর গ্রামের মো. শাহিন ইসলাম মোল্যার ছেলে রোমান ইসলাম ও মো. ছালাম।
মামলার অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ২০২৪ সালের ১ এপ্রিল দুপুর দেড়টা থেকে আড়াইটার দিকে রাজবাড়ী জেলা পরিষদ ডাক বাংলোর সামনে ট্রাফিক আইল্যান্ডের কাছে অভিযুক্ত আসামি দারোগা মাহফুজের মামলায় ওই নারী আইনজীবীকে গ্রপ্তার করা হয়। পরবর্তীতে ওইদিন রাত ৩টা থেকে সাড়ে ৩টার সময় নারী আইনজীবীকে নিয়ে এসআই মাহফুজ রাজশাহীর বোয়ালিয়া থানায় পৌঁছান। যাবার পর থানায় একটি কক্ষে ওই আইনজীবীকে আটক রাখা হয়। তাকে আদালতে পাঠালে রাজশাহী মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত তাকে তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এসআই মাহফুজুর রহমান ২০২৪ সালের ১৬ এপ্রিল থেকে ১৮ এপ্রিল পর্যন্ত রিমান্ডে এনে নারী আইনজীবীকে শারীরিক, মানসিক নির্যাতন শুরু করে। ওই রিমান্ডের সময় এসআই রিমান্ড কক্ষে নারী পুলিশের পরিবর্তে শেখ আব্দুল্লাহ, জাহিদ উল আলম, রোমান ইসলাম ও মো. ছালামকে রাখেন।
অভিযোগ রয়েছে, রিমান্ড চলাকালীন থানা হাজতে আটকে রেখে এসআই মাহফুজসহ অন্যরা ১০০ টাকা মূল্যের তিনটি নন জুডিসিয়াল সাদা স্ট্যাম্পে জীবননাশের হুমকি প্রদান করেন এবং নানারূপ ভয়ভীতি প্রদর্শন করে জোরপূর্বক স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নেন। সেই সঙ্গে তার কাছ থেকে ৩০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন।
এ বিষয়ে রাজবাড়ী জেলা বারের সভাপতি অ্যাডভোকেট খোন্দকার হাবিবুর রহমান বাচ্চু বলেন, মামলার পরিপ্রেক্ষিতে বিচারক সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট তামজিদ আহম্মেদ মামলাটি তদন্ত করতে রাজবাড়ী সিআইডিকে নির্দেশ প্রদান করেন।
মামলার অন্যতম আসামি ডিবি ডিএমপিতে বর্তমানে কর্মরত সাব ইনস্পেক্টর মাহফুজুর রহমান বলেন, বাদীর বিরুদ্ধে তৎকালীন সময়ে ২টি মামলা হয়। তিনি ওই মামলা দুটির তদন্তকারী কর্মকর্তা হিসেবে বিধি মোতাবেক যতটুকু তাই করেছেন। এর বাইরে তিনি অতিরঞ্জিত অভিযোগ এনে মামলা করলে, তা আইনগতভাবেই মোকাবিলা করা হবে।